কলকাতা প্রতিনিধি
রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
আতঙ্ক, ভয় আর করোনা ৷ এই তিন শব্দকে সঙ্গী করেই, মুখে মাস্ক, হাতে স্যানিটাইজারের বোতল নিয়ে শেষের মুখে বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় ও সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো ৷ যেখানে গোটা শহর, গোটা রাজ্য সেজে ওঠে নতুন আলোয় ৷ গোটা শহর, গোটা রাজ্য নতুন ছন্দে চার-দিন যাপন করে, সেই চারদিনের মহা উৎসব যেন এবার ছিল একেবারেই অন্যরকম ৷ আনন্দের মধ্যেও ছিল অনেকটাই সাবধানতা ও ইতস্তত ভাব ৷ যে উৎসব শুঘু মাত্রই দেবীর আরাধনা নয়, মিলন উৎসব সে উৎসবেই এবার মিলনে বাঁধা ৷ একে অপরের মাঝে সামাজিক দুরত্ব ৷ হাতে হাত না দিয়ে চলা, দূরে বসে কথা বলা ৷ আর ভিড়ের মাঝে না হারিয়ে, বরং ‘একলা’ চলা ৷
এরকম পুজো বাঙালি এর আগে আর কখনও দেখেনি ৷ অতিমারী যে উৎসবের রংকে কিছুটা হলেও আতঙ্কের রঙে ভরিয়ে তুলেছিল, তা গত চারদিনে বাঙালি কিছুটা হলেও দেখে ফেলেছে ৷ যে প্যান্ডেল হপিংয়ের জন্য গোটা বিশ্বে বিখ্যাত এই বাংলা ও বাংলার মানুষ, সেই গতিও এবার ধীমি তালে ৷ কোথাও দশ মিটারের দূরত্ব, কোথাও কুড়ি মিটার ৷ প্যান্ডেলের থিম যেন একা একা দাঁড়িয়ে ৷ তবুও বাঙালির এই উৎসব এবারও ‘নিউ নর্মাল পুজো’র নামকরণে, একেবারে নিজের মতো ৷
সেই নিজের মতো করে থাকার আজ শেষ দিন ৷ আজ মহাদশমী ৷ মাকে বিদায় দেওয়ার পালা ৷ নিউ নর্মালেও এবার বিদায়ের সুরও একেবারে অন্যরকম৷ ঢাকের বাদ্যিতে মা থাকবে কতক্ষণ সুর থাকলেও, সঙ্গে প্রার্থনা, মা তুমি পরের বছর আবার এসো, কিন্তু তাঁর আগে এই বিশ্বকে করোনা মুক্ত করে দাও৷
এবার কী তাহলে কোলাকুলি সম্ভব ? কাছে এসে প্রিয়মানুষকে শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা সম্ভব ? নাকি এখানেও সচেতনা? চিকিৎসকরা বলছেন, এবারটা সব নিয়মই না হয় হয়ে যাক নিউ নর্মালের মত ধরে ৷ এবার না হয়, একটু দূর থেকেই হাত জোড় করে চলুক শুভেচ্ছা বিনিময় ৷ সঙ্গে থাকুক সুস্থ থাকার সচেতন প্রার্থনা ৷ তবেই না আসছে বছর আবার হবে !
Leave a Reply